‘শিউলি ফুল বিদ্যাপীঠ’! আমার প্রথম স্কুল। নামে শিউলি থাকলেও আমাদের স্কুলের কোথাও কোনো শিউলি ফুলের গাছ ছিলো না। ছিলো কৃষ্ণচূড়া ফুলের গাছ। আহ! কৃষ্ণচূড়া ফোটার সময় বসন্ত হলেও আমার কাছে মনে হয় সারাবছরই ফুল দেখতাম।আচ্ছা আপনারা কী জানেন কৃষ্ণচূড়া’র মতো রাধাচূড়াও যে আছে? অনেকটা কাছাকাছি। পার্থক্য মূলত রং-এ।
যা-ই হোক এই কৃষ্ণচূড়া গাছ নিয়ে কত স্মৃতি। একবার বাজি ধরে মিনহাজের সাথে উঠলাম কৃষ্ণচূড়া গাছে। উদ্দেশ্য কে সবচেয়ে বেশি ফুল পেরে আনতে পারে। সেটা দেখলেন প্রিন্সিপাল ম্যাডাম। ক্লাস ফাইভের দুই ছেলে গাছে উঠেছে বলে একদম রোল পড়ে গেলো পুরো স্কুলে। ম্যাডাম রুমে ডেকে নিয়ে কিচ্ছু বললেন না। ফুলগুলো রেখে দিলেন। ওইসময় তো ইন্সটাগ্রাম ছিলো না, তাহলে ম্যাডাম ফুলগুলো দিয়ে করলেন কী? সেই প্রশ্নের উত্তর আমরা এখনো বন্ধুরা দেখা হলে একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করি।
একবার স্কুলের অ্যানুয়াল পিকনিক-এ বাস সাজানোর দায়িত্ব পড়লো আমাদের ক্লাসের কাছে। আমরা পুরো এলাকা ঘুরে যত ফুল আছে জবা, গোলাপ, গাঁদা সব জোগাড় করলাম। বাস সাজালাম। শেষে ফুল কম পড়লো। ভরসা সে-ই কৃষ্ণচূড়া।
এখনো স্কুলে গেলে আমাদের লোকেশন বার হয়ে যায় কৃষ্ণচূড়ার তলা। গুগল যখন আমাদের ম্যাপ চেনায় নি তখন এই লোকেশন বারই ছিলো আমাদের সম্বল।
এখনো ধূসর এই শহরে বসন্ত এলে যখন কৃষ্ণচূড়া দেখি গাছে আমি আমার ছেলে-মেয়ের সাথে দাঁড়িয়ে যাই নিচে। মুহূর্তেই আটপৌরে জীবন কেমন যেন স্মৃতি, রং আর ছায়া সব মিলিয়ে রঙ্গিন হয়ে ওঠে। আর ছেলে মেয়েরা? ওরা ছবি তোলে, রঙ্গিন করে ওদের দেয়াল; সোশ্যাল মিডিয়ার দেয়াল….